বৃষ্টিপাত (rainfall) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা:

বৃষ্টিপাত (rainfall) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা:

বৃষ্টিপাত কাকে বলে?

ভূ-পৃষ্ঠীয় জলভাগ থেকে সৃষ্ট জলীয় বাষ্প বায়ুর সংস্পর্শে এসে হালকা হয়ে উপরে উঠে ক্রমশ সম্পৃক্ত হয়ে অতিরিক্ত শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে জলকনায় পরিনত হলে তা ফোঁটা ফোঁটা আকারে পৃথিবীর বুকে নেমে আসে, তখন তাকে বৃষ্টিপাত বলে।

বৃষ্টিপাতের শ্রেণিবিভাগ:

 উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়,যথা:-

  •  পরিচলন বৃষ্টি।
  •  শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি।
  •  ঘূর্ণবাত বৃষ্টি।

পরিচলন বৃষ্টিপাত কাকে বলে?

সূর্যের উত্তাপে ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পুকুর, খাল, বিল প্রভৃতি জলরাশি থেকে জল জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। সাধারণ বায়ুর তুলনায় জলীয়বাষ্প হালকা বলে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সোজা উপর দিকে উঠে যায়। উপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এলে ঘনিভবনের ফলে জলীয়বাষ্প ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয় ও বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে মেঘের আকারে আকাশে ভেসে থাকে। জলকণাগুলি যখন পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে বড় বড় জলকণায় পরিণত হয় তখন সেগুলি নিজেদের ভারে ও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বাতাসে আর ভেসে থাকতে পারে না। তখন সেই মেঘ থেকে জলকণাগুলি প্রধানত জলের ফোঁটার আকারে ঝরঝর করে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। এই রকম বৃষ্টিপাতকে পরিচলন বৃষ্টিপাত বলা হয়।

পরিচলন বৃষ্টিপাতের কারণ:

  • নিরক্ষরেখার উভয় পাশে ৫০- ১০০ উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে সূর্য প্রায় সারা বছর ধরে লম্বভাবে প্রখর কিরণ দেয়।
  • এই অঞ্চলের স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ বেশি বলে দিনের বেলা প্রখর সূর্যকিরণের উত্তাপে এই অঞ্চলের জল বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পরূপে বাতাসের সঙ্গে মিশে থাকে
  • নিরক্ষীয় নিম্নচাপ শান্তবলয়ের বায়ু প্রধানত ঊর্ধ্বগামী বলে এই অঞ্চলের উষ্ণ ও হালকা বায়ু দ্রুত উপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে মেঘের সৃষ্টি করে এবং পরে ছোটো-ছোটো জলকণায় পরিণত হয় ও বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে মেঘের আকারে আকাশে ভেসে থাকে।
  • জলকণাগুলি যখন পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে বড় বড় জলকণায় পরিণত হয় তখন সেগুলি নিজেদের ভারে ও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বাতাসে আর ভেসে থাকতে পারে না। তখন সেই মেঘ থেকে জলকণাগুলি প্রধানত জলের ফোঁটার আকারে ঝরঝর করে পরিচলন বৃষ্টিপাত রূপে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণ:

  • বায়ুমণ্ডলে যথেষ্ট উষ্ণতা।
  • এই উষ্ণতার সাহায্যে বাষ্পীভূত হওয়ার জন্য প্রচুর জলভাগের প্রয়োজন।
  • পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য প্রয়োজনীয় দুটি প্রধান শর্তই ভালোভাবে পূরণ হয়, তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হয়।

উদাহরণ: নিরক্ষীয় অঞ্চলে যেমন, কঙ্গো ও আমাজন নদীর অববাহিকায়, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় এই অঞ্চলে সারা বছর ধরেই পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। প্রধানত অপরাহ্নের দিকে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হল পরিচলন বৃষ্টিপাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
এছাড়া নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে গ্রীষ্মকালের শুরুতে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে সাধারণত শরৎকালে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।


শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত
কাকে বলে?

জলীয়বাষ্পপূর্ণ আর্দ্রবায়ু ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় বায়ুপ্রবাহের গতিপথে উঁচু পাহাড়-পর্বত-মালভূমি থাকলে বায়ুপ্রবাহ সেখানে বাধা পায় এবং উঁচু পাহাড়-পর্বত-মালভূমির গা বেয়ে উপরে উঠে যায়। উপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে সেই জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বায়ু শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পর্বত বা মালভূমির প্রতিবাত ঢালে (বায়ুমুখী ঢালে) বৃষ্টিপাত রূপে নেমে আসে। শৈলরাশির অবস্থিতির জন্য বৃষ্টিপাত সংঘটিত হওয়ার দরুন এই বৃষ্টিপাতকে শৈলৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।

শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের প্রক্রিয়া:

  • জলীয়বাষ্প পূর্ণ আর্দ্রবায়ু ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় যদি কোনো উঁচু পাহাড়, পর্বত বা মালভূমিতে বাধাপ্রাপ্ত হয় তবে ওই বায়ু পর্বত বা মালভূমির গা বেয়ে আরও ওপরে ওঠে এবং উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ক্রমশ শীতল হয়।
  • পাহাড়ের উঁচু অংশ যদি বরফাবৃত থাকে তাহলে জলীয় বাষ্পপূর্ণ ওই বায়ু বরফের সংস্পর্শে এসে অথবা উঁচুতে ওঠার ফলে এমনিতেই আরো শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে বা বায়ুমুখী ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়।
  •  সমুদ্রের কাছে উঁচু পর্বত বা মালভূমি থাকলে, প্রবল বেগে প্রবাহিত জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্রবায়ু উঁচু পর্বত বা মালভূমি দ্বারা সমকোণে বাধা পেলে এবং পর্বতের উপরিভাগ বরফাচ্ছন্ন থাকলে শৈলোৎক্ষেপ প্রক্রিয়ায় বৃষ্টিপাত বেশি হয়
  •  সাধারণত মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত সবচেয়ে বেশি হয়।

উদাহরণ: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতের হিমালয় এবং অন্যান্য পাহাড়-পর্বতে প্রতিহত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমঢালে প্রতিহত হয়ে যে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায় তা শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের উদাহরণ।

প্রতিবাত ঢাল কাকে বলে?

বায়ুপ্রবাহ এসে পাহাড়-পর্বতের গায়ে যেদিকে প্রতিহত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় পাহাড়-পর্বতের সেই দিককে প্রতিবাত ঢালবলে। প্রতিবাত ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।

অনুবাত ঢাল কাকে বলে?

 বায়ুপ্রবাহ এসে পাহাড়-পর্বতের গায়ে যেদিকে প্রতিহত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় পাহাড়-পর্বতের সেই দিককে প্রতিবাত ঢাল বলে। আর এই পাহাড়-পর্বতের প্রতিবাত ঢালের বিপরীত দিককে অনুবাত ঢাল বলে। প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর তাতে আর জলীয়বাষ্প থাকে না। জলীয়বাষ্পহীন ওই শুকনো বাতাস পাহাড় অতিক্রম করে পাহাড়ের অপর দিকের  অনুবাত ঢালে গেলে সেখানে আর বৃষ্টিপাত হয় না।    

বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কাকে বলে?

জলীয়বাষ্পপূর্ণ আর্দ্রবায়ু পাহাড়-পর্বতে বাধা পেয়ে প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর তাতে আর জলীয় বাষ্প থাকে না। জলীয় বাষ্পহীন ওই শুকনো বাতাস পাহাড়-পর্বত অতিক্রম করে পাহাড়ের অপর দিকে অনুবাত ঢালে গেলে এবং উপর থেকে নীচে নামার দরুন উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে আর বিশেষ বৃষ্টিপাত হয় না বা পরিমাণে কম হয়। পাহাড়ের বায়ুমুখী দিকের বিপরীত দিকের প্রায় বৃষ্টিহীন অনুবাত ঢালকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলা হয়।

উদাহরণ:

  • দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমিবায়ুর আরবসাগরীয় শাখা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিম উপকূলের পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং পাহাড়ের পশ্চিম ঢালে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়। পশ্চিমঘাট অতিক্রম করে এই বায়ুপ্রবাহ দাক্ষিণাত্যের মালভূমি ও মধ্যপ্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, কিন্তু জলীয় বাষ্পের ঘাটতি পড়ে বলে এখানকার বৃষ্টিপাত কম হয়। তাই পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্বাংশকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে
  • বঙ্গোপসাগর থেকে ছুটে আসা জলীয় বাষ্পপূর্ণ আদ্র বায়ু বাংলাদেশের উপর দিয়ে এসে গারো-খাসি-জয়ন্তিয়া পাহাড়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ওই সব পর্বতের বায়ুমুখী প্রতিবাত ঢালে অবস্থিত মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি-মৌসিনরাম অঞ্চলে প্রবল শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়। মেঘালয়ের রাজধানী শিলং এইসব পর্বতের অনুবাত ঢালে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের মধ্যে পড়ে, তাই এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম।

ঘূর্ণবাত বৃষ্টি কাকে বলে?

উষ্ণ ও জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস ও ঠান্ডা বাতাস ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়ে পরস্পরের মুখোমুখি হলে উষ্ণ বাতাস শীতল বায়ুস্তরের সীমারেখা ধরে ক্রম উচ্চ ঢালে উপরে উঠতে থাকে। উষ্ণ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে বৃষ্টিপাত ঘটায়।  আবার জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নিম্নচাপের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে উপরে উঠে শীতল হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে ঘূর্ণবাত বৃষ্টি বলে। ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানে প্রচন্ড উষ্ণতার প্রভাবে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে চারিদিক থেকে ছুটে আসা শুকনো, ঠান্ডা ও ভারী বাতাসের ওপর জলীয় বাষ্পপূর্ণ গরম বাতাস উঠে যাওয়ার জন্যই ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণবাত বৃষ্টি সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে ঝিরঝির করে পড়ে।

উদাহরণ: পূর্ব ভারতে কালবৈশাখী ঝড়ের ফলে যে বৃষ্টিপাত হয় তা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাতের একটি উদাহরণ।

ঘূর্ণবাত বৃষ্টি দুই ধরনের, যথা:-

  •  ক্রান্তীয় ঘূর্ণবৃষ্টি।
  •  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবৃষ্টি।

 ক্রান্তীয় ঘূর্ণবৃষ্টি প্রক্রিয়া:

  •  জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নিম্নচাপের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে উপরে উঠে শীতল হয়ে ক্রান্তীয় বৃষ্টিপাত ঘটায়।
  •  কোনো স্থানে প্রবল নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে, চারদিক থেকে ছুটে আসা শুকনো ঠান্ডা ও ভারী বাতাসের উপর জলীয় বাষ্পপূর্ণ গরম বাতাস উঠে যাওয়ার জন্যই ক্রান্তীয় ঘূর্ণবৃষ্টিপাতের সৃষ্টি হয়।
  •  ঘূর্ণবাত বৃষ্টির সময় বিশাল অঞ্চল জুড়ে মেঘের সৃষ্টি হয়।
  •  সাধারণত এই জাতীয় বৃষ্টিপাত দীর্ঘ সময় ধরে ঝিরঝির করে পড়ে।

নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবৃষ্টি প্রক্রিয়া:

  •  নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে উষ্ণ ও শীতল বায়ু পরস্পরের বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়, কিন্তু উষ্ণবায়ু হালকা বলে।
  •  তা ধীরে ধীরে শীতল বায়ুর উপর উঠে আসে।
  •  উষ্ণবায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প শীতল ও ঘনীভূত হয়ে নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণবৃষ্টিপাত ঘটায়।
  •  দুই ভিন্নধর্মী বায়ুপ্রবাহের সংযোগ রেখা বা সীমান্ত অঞ্চলে এই বৃষ্টিপাত ঘটে বলে একে সীমান্ত বৃষ্টি ও বলা হয়।
  •  নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ঘূর্ণবৃষ্টি দীর্ঘক্ষণ ধরে টিপটিপ করে পড়ে।
  •  জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে মাঝে মধ্যেই ঘূর্ণবৃষ্টি দেখা যায়।

বৃষ্টিপাত নির্ণয়:

কোনো জায়গায় কতটা বৃষ্টি হয়েছে তা বৃষ্টিমাপক যন্ত্র [Rain Gauge] দিয়ে মাপ করা হয়। শীতপ্রধান অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তে তুষারপাত হয়। ঐ তুষার গলে যে জল হয় তা মেপে সেখানকার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। 

সমবর্ষণরেখা:

ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সমান নয়। কোথাও বেশি বৃষ্টিপাত হয়, কোথাও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয় আবার কোথাও কম বৃষ্টিপাত হয়। ভূপৃষ্ঠের যে সব জায়গায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক রকম, সেই সব জায়গাগুলিকে যে রেখার সাহায্যে যুক্ত করে মানচিত্রে দেখানো হয় তাকে সমবর্ষণরেখা বলে। অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের সমান বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলগুলি মানচিত্রে যে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে দেখানো হয় সেই রেখাকে সমবর্ষণরেখা বলে। সাধারণভাবে পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয়দিকে ক্রান্তীয় অঞ্চল পর্যন্ত এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হয়। উপক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশসমূহের পশ্চিমপ্রান্তে বৃষ্টিপাতের অভাবে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বেশি। পৃথিবীর দুই মেরু ও মেরুপ্রদেশে এবং উঁচু পর্বতের মাথায় অতিরিক্ত ঠান্ডার প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তে তুষারপাত হয়।

Sukanta Das is the founder of Studyniea.in. He holds a Master’s degree (M.A) in Political Science and has a strong passion for education, especially in the fields of general studies and current affairs. With years of academic experience and a clear understanding of students' needs, he created Studyniea.in to offer reliable, easy-to-understand, and exam-focused content for learners preparing for school exams and competitive government exams. His mission is to build a supportive learning platform where students can grow their knowledge and confidence, step by step.

Post Comment

error: Content is protected !!