INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

আজবিক মতবাদ সম্পর্কে যা জানো লেখো:

আজবিক মতবাদ সম্পর্কে যা জানো লেখো:


আজীবিক মতবাদ (Ājīvika) প্রাচীন ভারতে এক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও দার্শনিক মতবাদ ছিল, যা মহাবীরের জৈন ধর্ম এবং গৌতম বুদ্ধের বৌদ্ধ ধর্মের সমসাময়িক। আজীবিক মতবাদ খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মক্কলিপুত গোঁশাল

আজীবিকের মূল দর্শন ও মতবাদ:
নিয়তিবাদ (Determinism):
  • আজীবিক মতবাদে বিশ্বাস করা হয় যে পৃথিবীর সবকিছু পূর্বনির্ধারিত এবং তা প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে ঘটে।
  • ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তি বা প্রচেষ্টার মাধ্যমে জীবন বা কর্মফল পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
  • জীবনের সমস্ত ঘটনা নিয়তি বা ভাগ্যের দ্বারা নির্ধারিত।

অতিমাত্রায় তপস্যা:
  • আজীবিকরা কঠোর তপস্যা ও আত্মসংযমে বিশ্বাস করত।
  • তারা শারীরিক কষ্ট সহ্য করাকে মোক্ষ বা চূড়ান্ত মুক্তির পথ বলে মনে করত।

আত্মার বিশ্বাস:
  • আজীবিকরা বিশ্বাস করত যে আত্মা চিরন্তন এবং পুনর্জন্মের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
  • তবে আত্মার মুক্তি একমাত্র নিয়তির ফলাফল, কোনো মানসিক বা আধ্যাত্মিক প্রচেষ্টার ফল নয়।

ঈশ্বরের প্রতি অনাস্থা:
  • আজীবিক মতবাদে কোনো সৃষ্টিকর্তার ধারণা ছিল না।
  • তাদের মতে, জগৎ এবং এর সমস্ত নিয়ম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হয়।

জীবনযাত্রা:
  • আজীবিক সন্ন্যাসীরা সম্পূর্ণ নগ্নভাবে জীবনযাপন করত।
  • তারা সম্পদ বা ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকত এবং কেবলমাত্র ভিক্ষার উপর নির্ভরশীল ছিল।

আজীবিক মতবাদের পতন:
আজীবিক মতবাদ বৌদ্ধ, জৈন, এবং হিন্দু ধর্মের জনপ্রিয়তার কারণে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রথম দিকে (বিশেষত সম্রাট অশোকের সময়) এটি কিছুটা প্রভাবশালী ছিল। তবে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর পর থেকে এই মতবাদের অনুসারীরা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

আজীবিক মতবাদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
আজীবিক মতবাদ প্রাচীন ভারতের দার্শনিক এবং ধর্মীয় চর্চার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এটি
 ভারতীয় চিন্তাধারার বৈচিত্র্য ও বিকাশে অবদান রেখেছে।

0 Comments:

Responsive

Ads

Here